জকিগঞ্জ টুডে ডেস্ক:: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরী হয়েছে। আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন সংগ্রহকারী অনেক নেতা নিজের পক্ষে দলীয় সমর্থন আসবে এমন ইঙ্গিত দিয়ে নিরবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ আসনের আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ১৯ জন সম্ভাব্য প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
আওয়ামীলীগের মনোনয়ন সংগ্রহকারী নেতারা হলেন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ড. হাফিজ আহমদ মজুমদার, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সীমান্তিকের প্রতিষ্ঠাতা ড. আহমদ আল কবির, ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগীয় আইনজীবি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি মোশতাক আহমেদ, রমনা থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল মুনির চৌধুরী, সিলেট মহানগর কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুল মোমিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ফয়সল আহমদ রাজ।
বিএনপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়তে এ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টন থেকে ধানের শীষের মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেছেন জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ইকবাল আহমদ তাপাদার, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী. সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রবাসী শরিফ লস্কর, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান পাপলু, আরব আমিরাত বিএনপির সভাপতি জাকির হোসাইন, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান।
জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষে জাতীয় পার্টির ৫ জন নেতা কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা হলেন, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় হুইপ ও জাপা চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক উপদেষ্ঠা আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন এমপি, জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব শাব্বির আহমদ, কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির অন্যতম নির্বাহী সদস্য ও সিলেট জেলা ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি শিল্পপতি এম জাকির হোসেইন, জাপার কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মতিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ।
এদিকে জোট-মহাজোটের আসন বন্টন নিয়ে নেতাকর্মীরা অনেকটা হতাশায় রয়েছেন। আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা শরিকদল জাপাকে নিয়ে ও বিএনপি নেতাকর্মীরা জামায়াতকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী না চাইলেও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আসন ধরে রাখতে মরিয়া। বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জোটের শরিকদল জামায়াতের কোন নেতাকে জোটের প্রার্থী হিসেবে মানতে নারাজ। অতীতে এ আসনে জোটের প্রার্থী ছিলেন জামায়াতের নেতা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। এতে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থান অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের।
খোঁজ নিয়ে জানগেছে, ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে ৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন জামায়াত নেতা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন আলহাজ্ব হাফিজ আহমদ মজুমদার, সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বির আহমদ কেন্দ্রের নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার কারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক উপদেষ্ঠা আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন এমপি নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সিলেট-৫ আসনটি জোটের শরিকদলকে ছাড় না দিতে কেন্দ্রে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে আসন ধরে রাখতে জোট-মহাজোটের শরিকদলগুলোর নেতাকর্মীরা তৎপর রয়েছেন।
একটি সূত্রে জানাগেছে, এ আসন জোট-মহাজোটের দখলে চলে যেতে পারে। জোটের প্রার্থী হয়ে জামায়াতের কর্ম পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আভাস পাওয়া গেলেও মহাজোটের প্রার্থী হয়ে কে লড়বেন এ আসনে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
Leave a Reply